বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব মৌমাছি দিবস-২০২৪ উপলক্ষে 'মৌমাছির সংস্পর্শে নবীনের আলোড়নে' শীর্ষক স্লোগানকে সামনে রেখে নবীন ও প্রবীণ মৌচাষিদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার (২০ মে) দুপুর ১২ টায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি অনুষদের সেমিনার রুমে নবীন-প্রবীন মৌচাষী এবং দেশ বরেণ্য কীটতত্ত্ব বিজ্ঞানীদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।উক্ত অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ডিন ড. মোহাম্মাদ আলি এবং পরিচালনা করেন কীটতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. রুহুল আমিন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. অলক কুমার পাল ও কোষাধ্যক্ষ ড. মো. নজরুল ইসলাম। এছাড়াও সারা দেশ থেকে শীর্ষস্থানীয় মৌচাষি, কীটতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ এবং পোস্টগ্রাজুয়েট ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ উক্ত সভায় অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানটির শুভেচ্ছা বক্তব্যে বিশিষ্ট মৌ-বিজ্ঞানী কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, "মৌচাষ বাংলাদেশের কৃষি খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি শুধুমাত্র মধু উৎপাদনের জন্য নয়, বরং পরাগায়ণের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন করে। তবে বাংলাদেশের মৌ-শিল্পের কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও এর সম্ভাবনা অপরিসীম। বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং অতিবৃষ্টি ঘটে, যা মৌমাছির বাসস্থান ধ্বংস করে। কৃষিতে কীটনাশকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার, মৌমাছির বিভিন্ন রোগ এবং প্যারাসাইট যেমন স্মল হাইভ বিটল, ভ্যারোয়া মাইট, থলি ব্রুড এবং ফাউল ব্রুড সহ আরও কিছু রোগ বাংলাদেশে মৌচাষের জন্য বড় হুমকি। এছাড়াও কিছু সম্ভাবনা আছে যেমন বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ এবং বন্য ফুলের প্রাচুর্য রয়েছে, যা মৌচাষের জন্য আদর্শ। মৌমাছির পরাগায়ণের মাধ্যমে ফসল ফলন বৃদ্ধি করা যায়, যা কৃষি খাতে টেকসই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মৌমাছি থেকে মধু ছাড়াও পোলেন, প্রপোলিস, মোম, মৌ-বিষ এবং রয়্যাল জেলির মতো মূল্যবান পণ্য পাওয়া যায়, যা বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হতে পারে। সমস্যাগুলো কাটিয়ে সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগিয়ে মৌচাষে সকলের অংশগ্রহণে অর্থনৈতিক সম্মৃদ্ধি অর্জন সম্ভব।"
সভায় শীর্ষস্থানীয় মৌচাষিরা তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন এবং তরুণদের জন্য দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। তরুণ উদ্যোক্তারা তাদের উদ্দীপনা ও আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং মৌমাছি চাষে তাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথাও জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন শেকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, "শুধু মধু উৎপাদনেই নয়, পরাগায়নে মৌমাছি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কীট পতঙ্গ কমে যাওয়ায় পরাগায়নের জন্য পার্কে মৌমাছি ছেড়ে দেওয়া হয়। সুতরাং মৌমাছি ছাড়া আমাদের উৎপাদন হ্রাস হয়ে যাচ্ছে এবং যাবে। তাই একে অবহেলা করার সুযোগ নেই। আমি মনে করি, মৌমাছি দিবসের এই অনুষ্ঠান আরও বড় পরিসরে সারা দেশে হওয়া দরকার।"
মুক্তির ৭১/নিউজ /আশরাফুল