মতামত:
আমার প্রজন্মের মানুষের কাছে ২০২৪ সালে এসে ১৯৭২-৭৪ সালের ঘটনাপ্রবাহ মনে পড়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক। সে ছিল এক ভয়াবহ অস্থির সময়, যার কিছু আলামত কিছুদিন ধরে দেশে আবার দেখা যাচ্ছে। তখন সদ্যঃস্বাধীন দেশটিকে স্বাধীনতাযুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে তুলে আনার চেষ্টা করছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৯ মাসের যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সব কিছু ধ্বংস করে দিয়েছে।
দেশ চলছে বিদেশি সাহায্য বা রিলিফের ওপর নির্ভর করে। বিদেশ থেকে চাল বা গম না এলে বাড়িতে রান্না হয় না। এই সময় দেশে শুরু হলো নানা ধরনের নৈরাজ্য। এই নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য স্বাধীনতাবিরোধী অতি বাম, অতি ডান, জামায়াত আর দেশের এক শ্রেণির শিক্ষিত সুধীজন জোট বাঁধল।
দেশে ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র’ নামের এক অদ্ভুত মতবাদ কায়েম করবে বলে গঠিত হলো জাসদ আর তাদের সশস্ত্র বাহিনী ‘গণবাহিনী’। এসব অশুভ জোটের সঙ্গী হলো বেশ কিছু অসাধু কালোবাজারি, মজুদদার, লাইসেন্স আর পারমিট ব্যবসায়ী। দেশের এই সংকটের সময় তারা গড়ে তুলল সব ধরনের নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট। দোষ চাপাল ভারতের ওপর।
এদের মধ্যে আবার উল্লেখযোগ্যসংখ্যক তস্কর ছিল, যারা রাতারাতি আওয়ামী লীগ বনে যায়। দেয়ালে স্লোগান লেখা হলো ‘আশি টাকা চালের দাম হরে কৃষ্ণ হরে রাম’। যুদ্ধের সময় যেমন ভারত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল, যুদ্ধের পরও তারা সাধ্যমতো দেশ পুনর্গঠনে আমাদের পাশে ছিল। পণ্য পরিবহনে তারা চেষ্টা করেছে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে। বাংলাদেশ বিমানের যাত্রা শুরু হয়েছিল ভারতের দেওয়া দুটি পুরনো এফ-২৭ বিমান দিয়ে।
পাকিস্তানদেশে প্রথম অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টার মধ্যে ছিল বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে সংঘাত সৃষ্টি করা। আদমজী আর টঙ্গীর শিল্পাঞ্চলে সংঘাতে প্রাণ গেল কয়েকজন শ্রমিকের। চীনপন্থী ‘বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি’র নেতা আবদুল হক ১৯৭৩ সালের ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টোকে ‘আমার প্রেসিডেন্ট’ সম্বোধন করে চিঠি লিখে ‘মুজিবকে উত্খাত করার জন্য’ অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা চাইলেন। মাঠে সক্রিয় নকশালপন্থী উগ্র বাম ঘরানার আরেক কমরেড সিরাজ সিকদার। তাঁর রাজনীতি, অপছন্দের সব মানুষকে গলা কেটে হত্যা করতে হবে। আত্রাই এলাকায় নবগঠিত বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করল নকশালপন্থীরা। নিত্যদিন পুলিশ ফাঁড়ি লুট, পাটের গুদামে আগুনসহ সারা দেশে চোর-ডাকাতদের তখন বাড়বাড়ন্ত অবস্থা।
যুদ্ধের সময় কৃষিব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়ে। বিভিন্ন জায়গায় গুদাম থেকে সার লুট হওয়া শুরু হলো। আর বঙ্গবন্ধুকে অসত্য ও অর্ধসত্য তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন এক শ্রেণির আমলা, যাঁরা সেই শুরু থেকেই দেশে তাঁদের তন্ত্র কায়েম করার জন্য ব্যস্ত ছিলেন। আমলাদের সেই ধারা এখনো সক্রিয় এবং বেপরোয়া। অতি সম্প্রতি দেশের এই আমলাকুল কটি অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত নিয়ে খোদ সরকারকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। দেশের উচ্চ আদালত সিদ্ধান্ত দিল, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আয়কর দিতে হবে। উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত শিরোধার্য। তবে এই সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করার সুযোগ আছে। মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তারা আবেদন করতে পারেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তর সইল না। কয়েক দিন পর ঈদ। কোনো কিছু বিবেচনা না করে শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার নির্দেশ দিল এনবিআর। এতে কয়েক হাজার শিক্ষক, কর্মকর্তা আর কর্মচারীর ঈদের আগে বেতন-বোনাস বন্ধ হয়ে গেল। তীর গেল সরকারের দিকে। পরিবহনভাড়া সাত টাকা বাড়িয়ে তিন পয়সা কমানোর চেয়ে বড় মসকরা আর কী হতে পারে? এনবিআর হুকুম দিল, জুলাই মাস থেকে মেট্রোভাড়া ১৫ শতাংশ বাড়বে। পরিবহনমন্ত্রী জানালেন এটি তিনি জানেন না। জনগণ বলে, প্রধানমন্ত্রী বা সরকারের প্রতিপক্ষ বিরোধী দল নয়, প্রতিপক্ষ আশকারা পাওয়া এই আমলাকুল। তাদের আবার প্রায় সবার এক পা বিদেশের মাটিতে। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে কোনো কোনো আমলা নানা বিষয়ে কিভাবে তাঁকে বিভ্রান্ত্র করেছেন, তা জানা যায় তাঁর সঙ্গে যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁদের আত্মজীবনী পড়লে। ১৯৭৪ সালে দেশে খাদ্যাভাবের পেছনে নানা রকম কারণ আছে, যার একটি হচ্ছে তখনকার খাদ্যসচিবের বিভ্রান্ত্র তথ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সঠিক পরিস্থিতি জানতে না দেওয়া। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর ওই সচিব জিয়ার উপদেষ্টা ও মন্ত্রী হয়েছিলেন। তাঁর সন্তান এখন বিএনপির একজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতা।
মাসখানেক ধরে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা পর্যবেক্ষণ করলে আমার প্রজন্মের কাছে মনে হতে পারে, আলামত ভালো নয়। প্রথম হচ্ছে, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার অস্থির করছেন। রমজান মাস আসতে না আসতে এই ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। সরকার অনেক চেষ্টা ও আলাপ-আলোচনা করেছে, কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না। সবার নানা অজুহাত, যার কোনোটাই ধোপে টেকে না। ব্যবসায়ী নেতারা গণমাধ্যমের সামনে এসে বড় বড় প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু বাস্তবে কোনো কিছুরই পরিবর্তন হয় না। তারপর শুরু হলো হাটবাজারে, দোকানপাটে, গাড়ির গ্যারেজে, নিত্যপণ্যের ও পাটের গুদামে রহস্যজনক আগুন। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে একদল ডাকাতের হামলার উদ্দেশ্য কী ছিল, তা পরিষ্কার নয়। সেখানে তাদের কাজে লাগে তেমন কিছু তো নেই। কর্মকর্তাদের থাকার কয়েকটি আবাসগৃহ আছে। মাঝেমধ্যে শ্রমিক অসন্তোষ তো আছেই। তারপর শুরু হলো ছাত্ররাজনীতি নিয়ে বেহুদা বিতর্ক। এবার নতুন রূপে আবির্ভাব ঘটেছে ভারতবিরোধিতার।
প্যারিসে এক পলাতক আসামি বললেন, ‘যেহেতু ভারত চেয়েছে, সেহেতু বাংলাদেশের গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে।’ অতএব এবার ভারতের পণ্য বয়কটের নামে এক নতুন তামাশার সূত্রপাত্র করতে হবে। এরা চাইছিল নির্বাচনের আগে দেশে একটি নৈরাজ্য সৃষ্টি করে তৃতীয় কোনো শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে। শেষতক শেখ হাসিনার চালের কাছে ধরা খেয়ে গেল। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন তো চীন ও রাশিয়াও চেয়েছে। তাদের পণ্য বয়কট করতে হবে কি না, তা কিন্তু তারা বলেনি। নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে কে কোন দেশের পণ্য কিনবে, তা তো তার সিদ্ধান্তের ব্যাপার। এই বয়কটের ডাকে একটু নাটকীয়তা আনার জন্য চৈত্র মাসে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ একটি শাল পুড়িয়ে জানিয়ে দিলেন এটি ভারতীয় পণ্যের প্রতীকী বয়কট। তিনি বললেন না বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পসহ অনেক শিল্পের বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল ভারত থেকে আসে। তাঁর নেত্রী হাসপাতালে যে অক্সিজেন নেন, তা-ও ভারত থেকে আসে। এসবের কী হবে, তা তিনি বলেননি। বিএনপির অন্য নেতারা জানিয়ে দিলেন, ওটি রিজভী আহমেদের একার সিদ্ধান্ত। এর মধ্যে দলের এক সিনিয়র নেতা ভারত থেকে চিকিৎসা নিয়ে এসে মাঠে এখন বেশ সরব।
সর্বশেষ যে বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কারণ রয়েছে, তা হচ্ছে চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) বা বম পার্টি নামক একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হঠাৎ ভয়ংকরভাবে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা। এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা নাথান বম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের ছাত্র ছিলেন। কোথায় তাঁর হাতে থাকবে রংতুলি আর সৃষ্টি হবে অপূর্ব সব শিল্পকর্ম, তিনি তুলে নিলেন অস্ত্র। পাহাড়ে গড়ে তুললেন তাঁর নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী। স্থাপন করলেন ট্রেনিং ক্যাম্প। সেখানে জড়ো হলো কুকি-চিন তরুণ-তরুণীরা। তারা একটি পতাকাও তৈরি করে ফেলল। জানিয়ে দিল তাদেরও একটি স্বাধীন রাষ্ট্র চাই। তাদের সঙ্গে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কোনো তফাত নেই। শুধু তফাত এক দল জলে ডাকাতি করে, আরেক দল পাহাড়ে। পাঠকদের একটু পাকিস্তান আমলে নিয়ে যেতে চাই। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সহায়তায় পাহাড়ে এমন ঘাঁটি গেড়েছিল ‘মিজো ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট’। তাদের নেতা লাল ডেঙ্গা। পাকিস্তান সরকার তার জন্য ঢাকার মতিঝিলে অফিস খুলে দিয়েছিল। মিজোরামকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করে তারাও তাদের পতাকা ওড়াতে চায়। তারা জলপাই রঙের ইউনিফর্ম পরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলে পাহাড়ে অনেক নিরীহ মানুষ হত্যা করেছে। দেশ স্বাধীন হলে বঙ্গবন্ধুর কঠোর মনোভাবের কারণে তারা সেখান থেকে উচ্ছেদ হয়। লাল ডেঙ্গা নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে ফিরে এসে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী হন।
পার্বত্য অঞ্চল, পার্শ্ববর্তী মিয়ানমার ও ভারতের কিছু অঞ্চলে এখনো এ ধরনের একাধিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন সক্রিয়, যার একটি আসামের উলফা, যারা একই আইএসআইয়ের সহায়তায় বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর সক্রিয় হয়েছিল। বিএনপির শাসনামলে তারা সরকারের সহায়তা পেয়েছিল। ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনা তার একটি বড় উদাহরণ। পার্বত্য অঞ্চলের সক্রিয় শান্তিবাহিনীও আইএসআইয়ের সহায়তা পেয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করার পর শান্তিচুক্তির মাধ্যমে তার অবসান হয়। একই ধরনের একাধিক বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী আছে ভারতের নাগাল্যান্ডে, যার অন্যতম হচ্ছে ‘ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট কাউন্সিল অব নাগাল্যান্ড’। বর্তমানে বাংলাদেশে সরকার যেহেতু এসব ব্যাপারে কোনো রকম প্রশ্রয় দেয় না, তারা অন্য পথে তাদের অস্ত্র সংগ্রহ করে। কেএনএফের সঙ্গে এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সুসম্পর্ক আছে বলে ধারণা করা হয়। ভারতের প্রখ্যাত সাংবাদিক রাজিব ভট্টাচার্যের লেখা ‘রেনডুবু উইথ রেবেলস’ গ্রন্থে এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা আছে। আরো আছে বিএনপি সরকারের আমলে তাদের সহায়তা পাওয়ার কথা।
কেএনএফ ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে বান্দরবানের রুমা আর থানচি এলাকায় তিনটি ব্যাংকে ডাকাতি করেছে। দিনের বেলায় জিপে চড়ে পিকনিকে যাওয়ার মতো করে হৈচৈ করতে করতে অপকর্মগুলো করেছে, সঙ্গে তাদের নারী সদস্যরাও ছিল। রাতে ব্যাংক ডাকাতির সময় তারা সবার সামনে মসজিদ থেকে ম্যানেজারকে ধরে এনে ব্যাংকের ভল্ট ভাঙতে না পেরে তাঁকে জিম্মি করেছে। পরে র্যাব তাঁকে উদ্ধার করে। পুলিশের মহাপরিদর্শকের অবস্থানকালে তারা পুলিশ ও সেনাচৌকির ওপর রাতে হামলা করেছে, তাদের গুলিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য আহত হয়েছেন। কেএনএফ এর আগে দেশে নতুন গঠিত জঙ্গিবাদী সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার সন্ত্রাসীদের অস্ত্র সরবরাহ ও তা চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এসব সন্ত্রাসী দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। পার্বত্য এলাকায় বাংলাদেশের সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর বেশ বড়সড় উপস্থিতি থাকার পরও সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো ভালো লক্ষণ নয়।
দেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর নেপথ্যের গুরু কারা, তা নিশ্চিত নয়। আইএসআইয়ের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে লন্ডনে পলাতক কোনো কোনো রাজনৈতিক নেতার নিয়মিত বৈঠক হয়। এরই মধ্যে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের আবার প্রকাশ্যে হাত ধরাধরি করে চলা শুরু হয়েছে। সঙ্গে বাম, স্বঘোষিত বাম, পরিত্যক্ত বাম, নষ্ট শিক্ষিত নাগরিক সমাজ আগে থেকেই আছে। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনটি নির্বিঘ্নে হোক যে দেশটি চায়নি, সেই দেশের একাধিক সংস্থা দেশের বেশ কিছু নাগরিক সংগঠনকে প্রকাশ্যেই অর্থায়ন করে। একজন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, যিনি এমন সব অর্থায়নে একটি সংস্থা পরিচালনা করতেন আর একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে একটি বিতর্কিত ও উসকানিমূলক অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন, তিনি সেই অনুষ্ঠানটি আর তাঁর টিভিতে প্রচার না করে ইউটিউবে প্রচার করছেন। আরো একাধিক সংবাদকর্মী দেশে ও দেশের বাইরে থেকে এ ধরনের অনুষ্ঠান প্রচার করে সরকারকে বিব্রত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বর্তমানে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো অন্য কিছুর সংকেত দিচ্ছে কি না, তা সরকারের বিভিন্ন সংস্থা দেখবে বলে দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ আশা করে। মানুষ আবার ১৯৭২-৭৪ বা ২০১৪-পূর্ববর্তী সময়ে ফিরে যেতে চায় না। অন্ধ হলে প্রলয় বন্ধ থাকে না।
সবাইকে ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা।
লেখক : বিশ্লেষক ও গবেষক
সূত্র / কালের কন্ঠ