বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ইং
  • প্রচ্ছদ

  • বাংলাদেশ

  • রাজনীতি

  • বিশ্ব

  • বাণিজ্য

  • মতামত

  • খেলা

  • বিনোদন

  • চাকরি

  • জীবনযাপন

  • শিক্ষা

  • প্রযুক্তি

  • গ্যাজেটস

  • সড়ক দুর্ঘটনা

  • ধর্ম

  • আইন আদালত

  • জাতীয়

  • নারী

  • সশস্ত্র বাহিনী

  • গণমাধ্যম

  • কৃষি

  • সাহিত্য পাতা

  • মুক্তিযুদ্ধ

  • আইন শৃঙ্খলা

  • আইন শৃঙ্খলা

  • ধর্ম

    তাহেরপুরে রাজা কংস নারায়ণের মন্দিরে এমপির দেয়া প্রতিমায় দুর্গোৎসব

    বাগমারা প্রতিনিধি থেকে
    প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৩ ইং
          328
    ছবি: তাহেরপুরে রাজা কংস নারায়ণের মন্দিরে এমপির দেয়া প্রতিমায় দুর্গোৎসব
      Print News


    বাগমারা (রাজশাহী)প্রতিনিধি:


    রাজশাহী বাগমারায় প্রতিটি মন্দিরে শুরু হয়েছে ডোলের বাজনা ডং ডং শব্দে মূখরিত হয়েছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। হিন্দু ধর্মালম্বীদের বাড়ি বাড়ি বিরাজ করছে দুর্গোৎসবের আমেজ। হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ উৎসব হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। এ বছর উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন আর ২টি পৌরসভায় ছোট বড় মিলে ৮৩টি মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার সিংহ। প্রতিটি মন্দিরে মাটির তৈরি প্রতিমা দিয়ে পূজা হলেও কেবল ব্যতিক্রম তাহেরপুর পৌরসভা অবস্থিত রাজা কংস নারায়ন রায় বাহাদুরের সেই মন্দিরটি। মন্দিরটি ইতিহাস খ্যাত সনাতন ধর্মাবলম্বী বাঙালিদের প্রথম দুর্গাপূঁজা স্থান হলেও ছিল অবহেলিত। দুর্গাপূজার উৎপত্তি স্থল হওয়া সত্বেও জাতীয় ভাবে এ স্থানটি ছিল লোকজনের দখলে। 

    রাজা কংস নারায়ণ রায় বাহাদুর প্রথম শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রচলন করেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুরে। ১৪৮০ খ্রিস্টাব্দের ওই দুর্গোৎসবে তিনি ব্যয় করেছিলেন নয় লাখ এক টাকা। ৫৩৭ বছর পর এবার সেখানে দুর্গাপূজার জন্য প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করে বাগমারা আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক রাজা কংস নারায়ন রায় বাহাদুরের রাজবাড়ীতে অবস্থিত মন্দিরটিতে অষ্টধাতুর একটি প্রতিমা তৈরি করে দিয়েছেন। ২০১৮ সালে এক টনের বেশি ওজনের এই প্রতিমাটি মন্দিরে স্থাপন করা হয়। প্রতিমাটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার।

    খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মা দুর্গার পৃথিবীতে প্রথম আবির্ভাব স্থল এই মন্দির। মা দুর্গার জন্মস্বর্গে। ত্রেতাযুগে রাবণের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে দশরথ পুত্র মহামতি রাম দুর্গার অকালবোধন পূজা করেন। মা দুর্গা তার পূজায় সন্তুষ্ট হয়ে রাবণ বধের বর প্রদান করেন। সে বর পেয়ে রাম লঙ্কারাজ রাবণকে বধ করতে সক্ষম হন। ৮৮৭ বঙ্গাব্দে (১৪৮০ খ্রিস্টাব্দে) কংস নারায়ণের আহ্বানে দুর্গা সাধারণ্যে আবির্ভূত হন। শরৎকালে আশ্বিন মাসের মহা ষষ্ঠী তিথিতে দেবীর বোধন হয়। ঐ পূজায় পৌরহিত্য করেছিলেন রমেশ শাস্ত্রী। মা দুর্গার প্রথম পদধূলিতে ধন্য এই পুণ্যভূমি। এই পুণ্যভূমি থেকেই শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা। শনিবার ছিল দুর্গাপূজার মহা সপ্তমী। মহা সপ্তমীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে বেড়ান। সেই সাথে পূজা অর্চনা করেন। মহাসপ্তমীতে রাজার সেই মন্দিরে লক্ষে করা গেছে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের উপচে পড়া ভিড়।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এরপর থেকেই শরৎকালের দুর্গাপূজা ছড়িয়ে পড়ে সারা ভারতবর্ষে। কালের পরিক্রমায় এখন আরও জাকজমকভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। রাজা কংস নারায়ণ তাহেরপুরে পাশাপাশি চারটি মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। এগুলো হলো গোবিন্দ মন্দির, শিব মন্দির, দূর্গা মাতা মন্দির এবং কালিমন্দির। রাজার বংশধররা ভারতে চলে গেলে ১৯৬৭ সালে রাজবাড়িসহ সব জমি লিজ নিয়ে সেখানে গড়ে তোলা হয় তাহেরপুর ডিগ্রি কলেজ। ২০১৩ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মন্দিরটি খুলে দিতে বাধ্য হয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। রাজার নির্মিত সেই চার মন্দিরে এখনও পূজা অর্চনা হচ্ছে।

    জানা যায়, মোঘল স¤্রাট আকবরের রাজত্বকালে বাংলার অন্যতম বারো ভূঁইয়ার রাজা কংস নারায়ন রায় মোঘল বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধের প্রাক্কালে ১৪৮০ খ্রীষ্টাব্দে ৮৮৭ বঙ্গাব্দে শরৎকালে বিশ্বের সর্বপ্রথম তৎকালীন নয় লক্ষ টাকা যা বর্তমানের ছয়শত কোটি টাকার সম-পরিমান অর্থ খরচ করে জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে বাঙালী হিন্দুদের মধ্যে রাজ পুরোহিত রমেশ শাস্ত্রীর দ্বারা তাহেরপুরে দুর্গাপূজার আয়োজন করেছিলেন। শ্রী শ্রী গোবিন্দ মন্দির ঘিরেই ছিল উৎসবের আয়োজন। এরই ধারাবাহিকতায় অদ্যবধি সারা বিশ্বের সমস্ত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান হিসেবে দুর্গাপূজা স্বীকৃত। 

    শ্রী শ্রী গোবিন্দ মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী চিরঞ্জিব রায় জানান, তাহেরপুরের ইতিহাসকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক মন্দিরটিতে ব্রোঞ্চের প্রতিমা স্থাপন করেছেন। দুর্গাপূজার উৎপত্তিস্থল শ্রী শ্রী গোবিন্দ মন্দিরকে জাতীয় মন্দিরের মর্যাদা এবং ঐতিহাসিক মন্দির হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবী জানাচ্ছি। ইতিমধ্যেই তাহেরপুরকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূণ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য ধর্ম মন্ত্রনালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ স্থানটি কে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে সরকারের নিকট তীর্থস্থান হিসেবে ঘোষণার দাবী জানান তিনি। এই ঐতিহাসিক এ স্থানটিকে পূণ্যভূমি হিসেবে ঘোষণা করা হলে এখানে পর্যটন নগরী গড়ে উঠবে। তাই সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তাহেরপুরের সনাতন নেতৃবৃন্দ।


    বাগমারা আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেন, রাজা কংস নারায়ণের শারদীয় দুর্গাপূজার প্রকৃত ইতিহাস যুগ-যুগান্তর ধরে যেন মানুষ স্মরণ করে সে উদ্দেশ্য নিয়ে অষ্টধাতু দিয়ে ব্রোঞ্জের প্রতিমাটি আমি নিজ উদ্যোগেই তৈরি করে দিয়েছি। প্রতিমাটির কারণে প্রাচীন এই মন্দিরটি আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। মন্দিরের কিছু সংস্কার কাজও করা হচ্ছে। সংস্কার কাজ পুরোপুরি শেষ হলে এটা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটা তীর্থস্থানে পরিণত হবে। মন্দিরটির উন্নয়নে আমি সব সময় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশে আছি।


    মুক্তির ৭১/ নিউজ/ সমিত

    আপনার মন্তব্য লিখুন
    আজ পবিত্র আশুরা
    ১৭ জুলাই ২০২৪ ইং
    Total Visitors : 752952