পবায় পানির অভাবে ধানের জমি ফেটে চৌচির, উৎপাদন না হওয়ার আশঙ্কা


পানির অভাবে ধানক্ষেত ফেটে চৌচির

২১ এপ্রিল ২০২৩ ইং
নিজস্ব প্রতিবেদক


নিজস্ব প্রতিবেদক:

খরা ও তাপপ্রবাহে পুড়ছে রাজশাহী। ভ‚গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে।  

গভীর নলকুপগুলোতেও তেমন পানি উঠছে না। বোরোর জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য পানি মিলছে না। এর মধ্যেও পবা উপজেলার এক ডিপ অপারেটর এর বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত ফসলে সেচ না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার হুজুরীপাড়া ইউনিয়নের সরিষাকুড়ি ৪ নম্বর ডিপের মাঠে।

 

শুক্রবার সরোজমিন দেখা যায়-ওই ডিপের আওতায় মাটি ফেটে গেছে। বেশ 

কিছু এলাকায় ধান পুড়ে সাদা হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বোরো ধানের ফলন বিপর্যয় বটেই ধানই না হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। আমাদের দেখে কিছুক্ষণের মধ্যে চাষিদের ভীড় বেড়ে যায়। উপস্থিত হোন ডিপ অপারেটর আলম হোসেন। তার সাথে এ নিয়ে তর্কে-বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন ভুক্তভোগি চাষিরা।

 

ওই এলাকার চাষি আমিনুল, এনামুল, হান্নান, জমসেদ বলেন, এক মাস ধরে এই বিলের বেশিরভাগ জমিতে সেচ পড়েনি। তাপদাহে সেই ধানে পুড়ে খাক। শীষে ধান নেই বললেই চলে। বছরের ক্ষেত এভাবে পুড়ে গেলে না খেয়ে থাকতে হবে। অথচ প্রতি বিঘা ধানে এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১২-১৪ হাজার টাকা। তেল-সার সবকিছুর মূল্য বেড়েছে। এখন শুরু হয়েছ সেচ সংকট। ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ঋণের টাকা শোধ নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন তিনি।

 

তারা আরো অভিযোগ করেন হীন স্বার্থে বেশীরভাগ কৃষকদের পানি না দিয়ে মুখ চেনা কয়েকজনকে পানি দিচ্ছে। যে কারণে অন্যদের জমিতে পানির অভাবে শত শত একর বোরো ধানের ক্ষেত ফেটে হা হয়ে আছে। বোরো ধান পাকার সময় হয়ে এলেও বেশির ভাগ ধানের শীষ আসেনি; অনেক গাছের আগা মরে যাচ্ছে।

 

অনেকে বলেন এ ফসলে পরিবার পরিজন নিয়ে দুবেলা খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারতেন। ফসল নষ্ট হলে তো বউ ছেলে নিয়ে পথে বসতে হবে। এখন ধানের চারায় এ সময় ফুল এসেছে আর সেই সময়ে পানির অভাবে চারা শুকিয়ে ধূসর বর্ণ ধারণ করছে। এই ফসল ঘরে তুলতে না পারলে, না খেয়ে থাকতে হবে। তারা বলেন এ অবস্থায় কোন কৃষি কর্মকর্তা আমাদের কাছে আসেন নি ও পরামর্শ দেননি।

 

এব্যাপারে জেলা কৃষকলীগ নেতা ইনতাজ আলী বলেন, ‘আমি বৃহস্পতিবার রাতে শুনেই শুক্রবার বিলে এসেছি। জমির অবস্থা দেখে আমার মাথায় খারাপ হয়ে গেছে। এখন ফলন বিপর্যয় নয়-ফসলই হবে না। আমি নিজেই বিএমডিএ, কৃষি ও  

পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে এ বিষয় নিয়ে যোগাযোগ করেছি।

 

এব্যাপারে ডিপ অপারেটর আলম হোসেন বলেন, ডিপে পানি কম পাওয়ায় এমন হচ্ছে। এটা একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ-এতে আমার কিছু করার নাই। ডিপ বন্ধ ও 

মুখ চেনে পানি দিচ্ছেন এমন অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।