আশ্বাসের ৮ মাসেও সুরাহা হয়নি শব্দদূষণের


বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শব্দদূষণ

৩০ মে ২০২৪ ইং
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:



অফিস সময়ে তীব্র যানজট, আটকে থাকা গাড়ির তীব্র হর্ণে অতিষ্ঠ শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব সিরাজ উদ-দৌলা হলের শিক্ষার্থীরা। একাধিকবার প্রশাসনের নিকট অভিযোগ, আন্দোলন,রাস্তা অবরোধের পর আশ্বাস মিললেও স্থায়ী কোন সমাধান হয় নি।


 

শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ হয়ে গত ৮ মাস পূর্বে গত ১১ সেপ্টেম্বর,২০২৩ ইং রাস্তা অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ  করে প্রতিবাদে নামে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে শব্দদূষণ রোধে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত  করে অবরোধ তুলে নিতে বলেছিলেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. হারুন-উর-রশিদ। দ্রুত সমস্যা  সমাধান না হলে আবারো রাস্তা অবরোধে নামবে শিক্ষার্থীরা এমন শর্তে অবরোধ তুলে নিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।



অতঃপর ৮ মাস অতিক্রম হলেও স্থায়ী কোন সমাধান হয় নি শব্দদূষণের। আন্দোলনের পর পর কিছুদিন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকেন্ড গেইটে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ সহ কিছু উদ্যোগ নিলেও সময়ের সাথে তাও হারিয়ে যায়। আবারো শব্দদূষণে অতিষ্ঠ শেকৃবির নবাব সিরাজ উদ-দৌলা হলের শিক্ষার্থীদের জীবন। তীব্র শব্দে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে শিক্ষা জীবন। 


ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের একজন নবাব সিরাজ উদ-দৌলা হলের ৭৯ ব্যাচের সামাউন হোসাইন জানান," সকাল ৮টা থেকে ১০ টা সময়টা খুবই কষ্টকর। দরজা, জানলা সব বন্ধ রাখলেও রুমে থাকা দায়। এই সময় রুমের বাইরে থাকার চেষ্টা করি, মাঝে মাঝে রিডিং  রুমে অবস্থান করি। "


নবাব হলের বি ব্লকের ৩ তলায় বসবাসকারী  আরেক শিক্ষার্থী  নবির হাসান জানান " একদম ভোরে কিছুক্ষন পড়তে ভালই লাগে। কিন্তু তার পরেই আর ভালো লাগে না। কানের কাছে শুরু হয় পিক পিক, ভুং ভুং। এই বিশ্রি শব্দের মিশ্রণের কোন কিছুতেই মনযোগ দেয়া যায় না।"


বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতের আশপাশে ১০০ মিটার পর্যন্ত নীরব এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা রয়েছে। সেখানে রাতে ৪০ ও দিনে ৫০ ডেসিবেল শব্দ মাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া আছে। কিন্তু সরেজমিনে মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করে যাচাই করে দেখা যায় যে শেকৃবির নবাব সিরাজ উদ-দৌলা হলের পাশে স্বাভাবিক ভাবে দিনের বেলা শব্দের মাত্রা ৫০-৭০ ডেসিবেল এর মধ্যে উঠানামা করে। রাতের বেলা ৩০-৪৫ ডেসিবেল। আর সকাল ৮ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত  শব্দ দূষনের মাত্রা ৭০-৯০ ডেসিবেল পর্যন্ত পৌঁছায়। আবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৮ টা পর্যন্ত  ৬০ থেকে ৮৫ ডেসিবেল পাওয়া গিয়েছে। 



এ বিষয়ে শব্দ দূষণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে জানতে চাইলে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আব্দুর রহমান জানান, " এরকম কন্টিনিউয়াস শব্দদূষণ  শারীরিক এবং মানসিক নানান রোগের কারণ হতে পারে। বিশেষ করে কাজে মনোযোগ হীনতা, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, মাথা ব্যাথা, শ্রবণশক্তি হ্রাস, মানসিক ভারসাম্যহীনতা সহ আরো নানা জটিল রুগের সৃষ্টি  হতে পারে।"



এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেকৃবি প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. হারুন-উর-রশিদ মুক্তির ৭১ নিউজকে জানান, শব্দ দূষণের বিষয়ে আমরা থানা, কমিশনার অফিস সব জায়গায় চিঠি দিয়েছি। ক্যাম্পাসের বাইরের এখতিয়ার তো আমাদের নাই। যেহেতু প্রশাসনকে আমরা জানিয়েছি এর ব্যবস্থা ওনারা নিবেন। আমরা সব জায়গায় চিঠি দিয়েছি। আর ছাত্ররা আবার অভিযোগ করলে আমরা আবার চিঠি পাঠাব।





মুক্তির ৭১/নিউজ /আশরাফুল