এবার কোরবানির হাট কাঁপাবে ‘যুবরাজ’


যুবরাজ ও তার মালিক

২৪ মে ২০২৪ ইং
দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুর প্রতিনিধি:



দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় ১৪ মণ ওজনের বিশাল আকৃতির শাহীওয়াল জাতের এক গরু। সৌদিতে থাকার কারণে মালিক খুশি হয়ে নাম রেখেছেন ‘যুবরাজ’।


মালিকের আশা এবার কোরবানির পশুর হাট কাঁপাবে তার ‘যুবরাজ’ নামে এই গরুটি। বিশালকার এ গরুটি নিয়ে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে মাতামাতি। বিভিন্ন স্থান থেকে গরু ব্যবসায়ীরা দেখতে আসছেন, করছেন হাকডাক। গরুর মালিক দাম ভালো পেলে ‘যুবরাজ' তুলে দেবেন ক্রেতার হাতে।


আজ শুক্রবার (২৪ মে) দুপুরে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের নেউলা গ্রামের খালপাড়ায় আলহাজ্ব আঃ কুদ্দুস মাষ্টারের  ছেলে সৌদি প্রবাসী মো. জাকারিয়া হাবিবের বাড়িতে গিয়ে দেখা মেলে এই যুবরাজের। ইটের দেয়াল আর টিনের ছাউনি দেওয়া ঘরের এক পাশে ছিল বিশাল গরুটি। এরপর পাশেই আছে যুবরাজের মাসহ আরেকটি গরু। গরুটির ওজন ৫৬০ কেজি, দৈর্ঘ্য ৮ ফুট ৫ ইঞ্চি ও প্ৰস্থ ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রচণ্ড রোদ ও তাপ থাকায় গরুটিকে দিনের ২ বার গোসল করাতে হয়। গরুটির মাথার ওপর সব সময় ১টি ফ্যান চলে। দেখা শোনার জন্য পরিবারের লোকজন ও মালিক জাকারিয়া নিজেও যত্ন নেন। 


গরু দেখতে আসা বুলবুল ইসলাম মুক্তির ৭১ নিউজ ডট কম এর প্রতিনিধিকে বলেন, আমি কয়েকদিন ধরে মানুষের কাছে শুনতেছি একটি অনেক বড় ষাঁড় লালন পালন করছে। সেটি দেখে আমি অনুপ্রাণিত হয়ে আগামীতে গরু নিয়ে নিয়ে লালন পালন করবো।


এলাকাবাসী সফিকুল ইসলাম জানান, পুরো থানায় এ রকম গরু কোথাও দেখি নাই, অনেকেই গরুটি দেখতে আসছে। গরুর ক্রেতা এসে দাম দর করছেন। মাঝে মাঝে এসে গরুটিকে দেখে যাই।


গরু ব্যবসায়ী আ. জান্নাত জানান, যুবরাজ নামে গরুটির ওজন প্রায় ১৪ মণ হবে। আমি শুনেছি  এবার এ উপজেলার সব চেয়ে বড় গরু। যত দ্রুত গিয়ে দরদাম করব।


গরুটির মালিক সৌদি প্রবাসী মো. জাকারিয়া হাবিব বলেন, আমরা যুবরাজকে সন্তানের মতোই বড় করেছেন। শাহীওয়াল জাতের এই গরুটিকে প্রতিদিন খড়,কাঁচা ঘাস, গমের ভূসি, খৈল, চিটা গুড়সহ পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়ানো হয়। অতিরিক্ত গরমে যাতে যুবরাজ অসুস্থ হয়ে না পড়ে সে জন্য গরুর ঘরের মধ্যে সারাক্ষণ চালানো হয় ফ্যান। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সহায়তায় গরুটির পরিচর্যা করা হয়। বর্তমানে গো-খাদ্য দাম বেশি হওয়ায় গরুর দাম বেশি চাচ্ছি। যুবরাজকে বিক্রির জন্য ১০ লাখ টাকা দাম হাঁকিছেন। তবে দামাদামি করে কম হলেও বিক্রি করে দেবেন যুবরাজকে। 


আলহাজ্ব আঃ কুদ্দুস মাষ্টার বলেন, আমার ছেলে বিদেশে ছিল। সেখান থেকে টাকা পাঠায় সেই টাকায় একটা গাভী কিনি। সেই গভীর একটা বাছুর হয়। তার নাম রাখা হয় 'যুবরাজ'। সেই গরুটি আমরা অনেক কষ্টে যত্ন সহকারে লালন পালন করি। গরুটি ছোট থাকতেই অনেকে এসে বিক্রি করতে বলেছিল। আমরা দেই নাই। আমাদের খুব শখের জিনিস। আমি এখন কোরবানির ঈদে গরুটি বিক্রি করতে চাই।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রতন কুমার ঘোষ বলেন, সৌদি প্রবাসী ওই সৌখিন খামারি প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে একটি সুন্দর রোগবালাই মুক্ত বিশাল একটি ষাঁড়ে  পরিণত করেছেন। আমি আশা করছি কুরবানীতে তিনি ভালো দাম পাবেন। এবার উপজেলায় অসংখ্য খামারি কুরবানী ঈদের জন্য প্রায় ১৬ হাজার গরু প্রস্তুত করেছেন। উপজেলায় চাহিদা রয়েছে ১১ হাজার গরু। বাকি সাড়ে চার হাজার গরু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রংপুর, রাজশাহী ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে গরু সরবরাহ করতে পারব। ভবিষ্যতে এ রকম গরু যদি কেউ পালন করতে চান প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হবে।


মুক্তির ৭১/নিউজ /আজিজার