ইউএনও'র বদলীতে কাঁদলেন শাল্লাবাসী


ইউএনও'র বদলীতে কাঁদলেন শাল্লাবাসী

১২ ডিসেম্বর ২০২৩ ইং
শাল্লা প্রতিনিধি


শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি :



দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও)   কর্মকর্তা আবু তালেবকে শাল্লা থেকে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বদলী করা হয়। বদলী উপলক্ষে উপজেলার বিভিন্ন সংগঠন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ অশ্রুসিক্ত নয়নে ইউএনওকে বিদায় সংবর্ধনা দেন। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় শাল্লা উপজেলা থেকে শ্রীমঙ্গল যাওয়ার সময় উনার বাসার সামনে জড়ো হন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সকল শ্রেণি পেশার লোকজন। এসময় কেঁদে কেঁদে সকলের সাথে কুশল বিনিময় করেন তিনি।



এদিকে প্রতিবন্ধী কমিটির সভাপতি চিন্ময় দাসও এসেছেন ইউএনও আবু তালেবকে বিদায় জানাতে। কারণ আবু তালেব শাল্লার ইউএনও থাকা অবস্থায় সকল প্রতিবন্ধীদের তিনি সরকারি সহায়তা দিয়েছেন। এছাড়া শাল্লা উপজেলার ডুমরা গ্রামের মিহির দাস এপেক্স কোম্পানীতে চাকুরী করার সময় ডান হাতে আঙ্গুল হারিয়ে অসহায়ত্ব জীবন যাপন করছিলেন।  সেই মিহিরের পাশে দাড়িয়ে তিনি বিভিন্ন ধরনের সহযোগীতা করেছেন। 


দুই বছর সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. আবু তালেব। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সমানে রেখে নির্বাচন কমিশনার(ইসি'র) নির্দেশনামতে নির্বাহী কর্মকর্তা  হিসেবে যোগ দিয়েছেন শ্রীমঙ্গলে।


শাল্লা উপজেলা থেকে ইউএনও হিসাবে আবু তালেব বিদায় নেয়ার সময় কেঁদেছেন এখানকার অনেক বাসিন্দা। কেঁদেছেন ইউএনও নিজেও। ফুল ছিটিয়ে, বুকে জড়িয়ে ধরে কোনো স্বজনের বিদায়ে যেমন মানুষ পিছু পিছু অনেক দূর পর্যন্ত এসে বিদায় দেন, আবু তালেবের বিদায়েও ঠিক তেমনই করেন শাল্লা উপজেলার স্থানীয়রা। বিদায়ের সেই ভিডিও ও ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে।



বিদায়ের সময় কান্নার প্রসঙ্গ জানতে চাইলে বর্তমানে শ্রীমঙ্গলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু তালেব মুঠোফোনে হেসে বললেন, দুই বছরের বেশি সময়ে শাল্লার জনগণের সঙ্গে থাকায় একটা গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছিল, তাই তিনি কেঁদেছেন এবং মানুষ ভালোবাসার জায়গা থেকে কেঁদেছেন।


তিনি আরও জানান, একজন ইউএনওর কাছে মানুষ কিছু প্রত্যাশা নিয়ে আসেন। আমার সঙ্গে সবাই কথা বলতে পেরেছেন। আমি মানুষের কথা শুনেছি। ফোনে, হোয়াটসঅ্যাপেও অনেকে যোগাযোগ করেছেন। আমি চেষ্টা করেছি মানুষের ভোগান্তি কমাতে। ইউএনও হিসেবে কাজের দায়িত্বের বাইরেও মানুষকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছি।


আবু তালেব আরও বলেন, অবকাঠামো তৈরি করেছি বলে মানুষ আমার জন্য কাঁদেননি, কেঁদেছেন তাদের সঙ্গে আমার যে যোগাযোগ ছিল, সে জন্য।


২০২২ সালের ২৭ জানুয়ারী শাল্লা উপজেলায় ইউএনও হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন মো. আবু তালেব। দায়িত্ব পালনকালে তিনি উপজেলা সদরে বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল একটি শহীদ মিনারের কাজ শুরু করেন, মিনি শিশু পার্ক তৈরি,  গাছ লাগিয়ে পরিষদ চত্বরকে সাজানো, পাঠাগার, উপজেলার সকল বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস জানার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই বিতরণসহ বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরি ও নানা উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।

মুক্তির ৭১/নিউজ /শান্ত